Tareef Hayat Khan

Architect-Researcher

  • Biography
  • Books
  • Journal
  • Conference
  • Teaching
  • Projects
  • Music
  • Sports
  • LifeClick to open the Life menu
    • Childhood
    • Midlife
    • Old age
  • DiaryClick to open the Diary menu
    • 7 Wonders I Achieved
    • 4 Sports I Explored
    • My 11 Tutors
  • Blog
  • Family Tree
  • Contact

7 things I wonder how I achieved before

অল্প বয়সের সাত অসমসাহসিক কান্ড যা এখন ভাবলেও গায়ে কাঁটা দেয়

প্রথমে শুরু করি কিছুটা হালকাভাবে। ছোটবেলা থেকেই আমার এডভেঞ্চারের নেশা ছিলো। যদি অন্য কোন সংস্কৃতিতে জন্মাতাম, হয়তো বাঞ্জি-জাম্পিং, স্কুবা ডাইভিং, আল্পাইন স্কিইং এসব করে ফেলতাম। তা যখন হয়নি, অল্প স্বল্প এডভেঞ্চারেই নেশাটা সীমাবধ্য রাখতে হয়। অবশ্যই সেটা বাবা-মায়ের অজান্তে, এবং অত সিরিয়াস অভিযান অবশ্যই না। কারন জানের মায়া আমারও ছিলো, এখনও আছে, আবার বাবা-মায়ের বেশী অবাধ্য হবার খায়েশও আমার তেমন একটা নাই। খুব সংক্ষেপে বলে ফেলি ঘটনা গুলোঃ

১। মতিঝিল কলোনীতে থাকতাম। সেখানে থেকে আগারগাঁয়ে সাইকেল চালিয়ে আমার স্কুলবন্ধু পাভেলের পাড়ার ফুটবল টিমে ‘হায়ার’-এ খেলতে যেতাম। সেটা এইচএসসির পর পর। আজকের মতো ট্রাফিক জ্যাম তখন ছিলোনা, কিন্তু যাত্রাপথ যথেষ্ট জটিল ছিলো। মতিঝিল, শান্তিনগর, মগবাজার, বাংলামটর পার হয়ে ভিআইপি রোড ধরে ফার্মগেট, তারপর ইন্দিরা রোড, রোকেয়া সরনী ধরে আগারগাঁও আবহাওয়া অফিস পর্যন্ত সাইকেল চালানোটা রীতিমতো পরিশ্রমের কাজ ছিলো। আবার বিকালে খেলেটেলে দিনের আলো থাকতে থাকতেই একই পথ ধরে বাসায় ফেরত আসা যাতে করে মায়ের হাতে ধরা না পড়ি, সেটা ছিলো খেলার থেকেও বড় চ্যালেঞ্জ।

২। বয়স বাড়ার সাথে সাথে পাড়ার বন্ধুগুলো হারিয়ে যাচ্ছিলো। কেউ চলে যেতো বাবা অবসর নেয়ার কারনে, কেউ চলে যেতো অন্য বন্ধুদের পরিমন্ডলে। আমি খুঁজে বেড়াতাম নতুন বন্ধু, নতুন এডভেঞ্চার। গভঃ ল্যাবরেটরী স্কুলের আরেক বন্ধু সোহেলের বাসাই ছিলো আমার বাসার সবচেয়ে কাছে।  সেটা বেইলী রোডে। সাথে আমার সেই সাইকেল। যাত্রাপথ আগেরটা মতো এতো বড় না। মতিঝিল থেকে শান্তি নগর হয়ে বেইলী রোড। কিন্তু সোহেল থাকতো পাঁচ তলায়। নীদে সাইকেল রেখে গেলে চুরির ভয়। তাই আমি সাইকেলটা সিঁড়ি দিয়ে পাঁচতলা পর্যন্ত নিয়ে যেতাম। যথেষ্ট পরিশ্রমের কাজ। বিশেষত সিঁড়ির মাঝে যখন টাইট জায়গায় সাইকেলটা বার বার ঘুরাতে হতো।   

৩। আরেক স্কুল বন্ধু শাকিল থাকতো ধানমন্ডিতে। মতিঝিল থেকে সাইকেল চালিয়ে ধানমন্ডী যাওয়াটা অসম্ভব কিছুনা। কিন্তু ঐ সময়ে ধানমন্ডী আমি ভালোমত চিনতামনা। তাও সাহস করে ঠিকানা নিয়ে চলে গেছিলাম একদিন। ৮ নম্বর দিয়ে ঢুকে ব্রীজটা পার হলেই সব গুলিয়ে যেতো। একবার ঠিক মত গেলেও পরেরবার আবার গুলিয়ে ফেলার মত ঘটনা বারবার ঘটেছে। ফলশ্রুতিতে ধানমন্ডীর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে হতো। তবে আগারগাঁও যাত্রার চেয়ে হয়তো এটা তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম পরিশ্রমের কাজ ছিলো।

৪। একসময় আমার ছিলো দেশলাইয়ের লেবেল জমানোর সখ। রাস্তাঘাটে যখনই চলতাম আমার নজর থাকতো রাস্তার কোনায় কোনায়, যদি কোন দেশলাই পড়ে থাকে। কেউ আমাকে হয়তো বলেছিলো রেললাইনের পাশে অনেক দেশলাই পাওয়া যাবে কারন যাত্রীরা জানালা দিয়ে ফেলে। তাই কোন একদিন শুরু করলাম বাড়ির কাছে কমলাপুর রেললাইন ধরে একলা হাঁটা। যেহেতু বিকালটাই ছিলো বেরানোর একমাত্র সময়, সন্ধ্যার আগেই বাসায় ফেরার তাড়া, তাই বেশীদূর যেতে পারতামনা। তবে কোন এক রমজান মাসে সকালে হাঁটা শুরু করে বুঝলাম এটাই আদর্শ সময়। যেহেতু রোজা রেখে দুপুরে খাবার ঝামেলা নাই, স্কুল টানা একমাস বন্ধ, তাই প্রায় প্রতি সকালেই রেললাইন ধরে হাঁটতাম, অনেকক্ষন, একলা। স্লিপারের উপর দিয়ে বড়ো বড়ো পায়ে, অথবা ট্রেন আসলে সাইডে নেমে। মনে হতো এক অজানার সন্ধানে পথ চলেছি।

৫। গাছে উঠার নেশা ছিলো ছোটবেলায়। বাসার কাছেধারে পাড়ার গাছগুলো জয় করা হয়ে গেছিলো আগেই। এরপর হাতপাকা করি বিল্ডিংএর কার্নিশগুলোতে উঠার। ব্যাডমিন্টন খেলার সময় কর্ক কার্নিশে উঠলে বিনা বাক্যব্যায়ে পাইপ বেয়ে কার্নিশে উঠে যেতাম। একতলার কার্নিশ জয় করার পর দোতলা বা তিনতলার কার্নিশ জয় করার ইচ্ছে জাগে। পরবর্তীতে পাইপ বেয়ে ছাদে ওঠার টেকনিকও বেশ ভালোভাবে রপ্ত করে ফেলি। সেটা আরো প্রতিষ্ঠিত হয় আশির দশকের মাঝামাঝি, যখন হঠাত জানা যায় ছাদে এন্টেনা লাগিয়ে প্রতিবেশী ভারতে দূরদর্শনের খেলাগুলো দেখা যায়। কেব্‌ল্‌ টিভির বর্তমান যুগে এটা হাস্যকর, কিন্তু সেই ক্রিকেট খেলা দেখার লোভে বার বার পাইপ বেয়ে ছাদে উঠে এন্টেনা ঠিক করা একটা রূটিন কাজ হয়ে গেছিলো। এখন সেই পাইপগুলো দেখলে মনে হয় নির্ঘাত পাগল ছিলাম সেই সময়।

৬। ওই সময়েরই কাছাকাছি ঘটনা, যখন আমার বাল্যসখা আসিফের সাথে আমি মতিঝিল কলোনীর পানির ট্যাঙ্কের মাথায় মই বেয়ে উঠলাম, একবার না বেশ কয়েকবার। সেখানে উঠে আমার মনে হতো পৃথিবীর চূড়ায় উঠে গেছি। কলোনীতে থেকেছি একুশ বছর। পরে ঘুরতে গেছি বেশ ক’বার। ঐ ট্যাঙ্কি দেখলে এখন মাথা ঘুরে। শেষ অংশটা ছিলো খাড়া মই, এবং হাত ছুটে গেলে পপাত চল্লিশ ফুট নীচে। ঐ বয়সে একবারও মনে হতো না হাত ছুটতে পারে। আর বলতে পারবোনা, হাত কাঁপছে।

৭। এইবার আরেক পাগলামীর গল্প। বাড়ির ছাদে উঠার অভ্যাস অনেক আগে থেকেই ছিলো। পাড়ার চারতলার ছাদগুলোতে পাইপ বেয়ে উঠতাম, বেশীর ভাগ সময় একলা, অথবা আসিফের সাথে। তবে তার চেয়েও পরিশ্রমের কাজ করলাম আমার আর্কিটেকচারের বন্ধু জয়ের সাথে। বাসার কাছে শাপলা চত্তরে তখন তৈরী হচ্ছে ৩২ তলা বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক ভবন। জয়ের চেহারা দেখে মনে হয়না সে এডভেঞ্চারের লোক, তবে ভিতরে ভিতরে সে অন্যপদ। প্রস্তাব দিতেই রাজী হয়ে গেলো। কন্সট্রাকশনের ব্যারিকেড পেরিয়ে সবার চোখের আড়ালে শুরু করলাম সিঁড়ি বাওয়া। তাড়াহুড়ো করলে হবেনা জানতাম। মনে আছে আধা ঘন্টার বেশী লেগে গেছিলো সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠতে। উঠে চারপাশে তাকিয়ে আবার সেই পৃথিবীর চূড়ায় যাবার আনন্দ পেয়েছিলাম।

 

Copyright 2013. All rights reserved.

Web Hosting by Yahoo!